অথবা, নৈতিক অগ্রগতির স্তর কয়টি ও কি কি?
অথবা, নৈতিক অগ্রগতির স্তরসমূহ ব্যাখ্যা কর।
ভূমিকাঃ নীতিবিদ্যার আলোচনায় নৈতিক প্রগতি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নৈতিক প্রগতি ব্যক্তির আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে ব্যক্তির পুর্ণতা লাভে সহায়তা করে। ব্যক্তি নৈতিক জীবনের পথে ধীরে ধীরে অগ্রসর হয় এ নৈতিক আদর্শকে সামনে রেখে। আর এই পথে অগ্রসর হতে হলে ব্যক্তিকে কয়েকটি স্তরে অতিক্রম করতে হয়। এ গুলোই নৈতিক প্রগতির স্তর।
নৈতিক প্রগতির স্তরসমূহঃ নীতিবিজ্ঞানী জেমস সেহা ও ম্যাকেঞ্জি নৈতিক প্রগতির স্তর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলোঃ
অধ্যাপক সেথের মতে প্রগতির স্তরঃ অধ্যাপক সেথ প্রগতির তিনটি স্তরের কথা উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলোঃ
crossorigin="anonymous">
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-3850092454288730"
data-ad-slot="2569077421">
১. বাহ্যিক হতে অভ্যন্তরীণ নৈতিকতায় গমনঃ এই স্তরে মানুষ কাজের নৈতিকতা বিচার করে সমাজে প্রচলিত নিয়ম ও প্রথা দ্বারা অর্থাৎ বহিঃশক্তিকে দ্বার। কিন্তু ব্যক্তির নৈতিক প্রগতির উন্নতির সাথে সাথে সে বুঝতে শেখে, বাহ্যিক ফলাফল দ্বারা নয় নিজের অন্তর্দৃষ্টি দ্বারা নিজের কাজের বিচার করাই যথার্থ।
২. কঠোর গুণগুলোকে কোমল গুণগুলোর অধীনস্ত করাঃ অধ্যাপক সেথ বলেন যে, নৈতিক প্রগতির নিয়মের দ্বিতীয় প্রকাশ হলো কঠোর গুণগুলোর ক্রমাগত কোমল গুণগুলো রূপান্তর, অস্তিত্ব ও নিরাপত্তার গুণগুলোকে কল্যাণ ও স্বাচ্ছন্দ্যের গুণগুলোতে পরিবর্তন।' নৈতিক প্রগতির প্রথম স্তরে প্রাধান্য লাভ করে কঠোর গুণগুলো আর দ্বিতীয় স্তরে প্রাধান্য পায় কমল গুণগুলো।
crossorigin="anonymous">
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-3850092454288730"
data-ad-slot="2569077421">
৩. সদগুণের পরিসরের ব্যাপকতাঃ এ স্তরের ব্যক্তি নৈতিক নিয়ম সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠে। সে নিজের ভেতরকার সদগুণগুলোকে প্রাধান্য দিতে থাকে। ফলে ব্যক্তি কেন্দ্রিকতা ভুলে সমগ্র সমাজের এবং স্বদেশ প্রেম বিশ্ব প্রেমে পরিবর্তিত হয়। নৈতিক প্রগতি সবসময় ক্ষুদ্র সীমা থেকে বৃহত্তর সীমায় অগ্রসর হয়ে থাকে।
ম্যাকেঞ্জির মতে নৈতিক প্রগতির স্তরঃ নীতিবিজ্ঞানী ম্যাকেঞ্জি তার ‘A Manual of EthicsÑ গ্রন্থে নৈতিক প্রগতির চারটি স্তর তুলে ধরেন। এগুলো হলোঃ
১. নৈতিক জগৎঃ ম্যাকেঞ্জির মতে, নৈতিক জগৎ হলো নৈতিক প্রগতির প্রধান স্তর। তার মতে, প্রতিটি মানুষই একেকটি নৈতিক জগতের অধীন। এই নৈতিক জগৎ নৈতিক আদর্শ, নির্দিষ্ট সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং ক্রিয়ার অভ্যাসগত রূপ নিয়ে গঠিত।
crossorigin="anonymous">
style="display:block; text-align:center;"
data-ad-layout="in-article"
data-ad-format="fluid"
data-ad-client="ca-pub-3850092454288730"
data-ad-slot="2569077421">
২. আমাদের জগতের অভ্যন্তরীণ বিরোধিতাঃ যখন কোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং নৈতিক আদর্শ ও অভ্যাস এর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়, তখন এদের মধ্যে সংগতি প্রতিষ্ঠা করা অত্যাবশ্যক হয়ে পড়ে। যখন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও নৈতিক আদর্শের মধ্যে সংগতি প্রতিষ্ঠিত হয় তখন তাদের মধ্যে পরিবর্তন সাধিত হয় সেই সাথে সুগম হয় নৈতিক প্রগতির পথ।
৩. নৈতিক অন্তর্দৃষ্টির গভীরতাঃ ম্যাকেঞ্জির মতে, নৈতিক অন্তর্দৃষ্টির গভীরতা নৈতিক প্রগতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর। একজন ব্যক্তি যখন গভীর অন্তর্দৃষ্টির অধিকারী হয়, তখন সে নৈতিক আদর্শ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞান লাভ করে।
৪. অপূর্ণতা বোধঃ ম্যাকেঞ্জির মতে, নৈতিক জগৎ ও নৈতিক জগতের অভ্যন্তরীণ বিরোধিতাই একমাত্র শর্ত নয়। বরং অপূর্ণতা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহারঃ পরিশেষে বলা যায় যে, নৈতিক প্রগতির সাথে নৈতিক আদর্শের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর এ দুটি বিষয় একে অপরকে প্রভাবিত, সমৃদ্ধ এবং বিকশিত করে এবং এদের পারস্পরিক ক্রিয়ার ফলেই নৈতিক প্রগতির স্তরগুলো বিকশিত হয়।


Post a Comment